এই প্রজন্মের কাছে ফুটবল মানেই লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। স্প্যানিশ লা লিগায় থাকতে তাদের কতই দ্বৈরথ দেখেছে ফুটবল প্রেমিরা। এখন দুই জন দুই মহাদেশে। সবকিছুই এখন আলাদা। তবুও আরও একবার মুখোমুখি হলেন তারা। লড়লেন সমান তালে। অনেকের মতে এটাই বোধয় মাঠের লড়াইয়ে তাদের শেষ সাক্ষাৎ। শেষ কি না, তা বলা না গেলেও আরব্য রজনীর রূপকথায় এক হলো মেসি-রোনালদো। প্রীতি ম্যাচ হলেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতিদ্বন্দ্বীতা দেখলো গোটা বিশ্ব। ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তে ভয়ংকর উত্তেজান আর রোমাঞ্চ। শুরুতেই মেসির গোলে পিএসজির এগিয়ে যাওয়ার পর জবাব দিয়ে ম্যাচে রিয়াদ অল স্টারকে সমতা ফেরান রোনালদো।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সৌদি আরবের রিয়াদের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে এক প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয় পিএসজি এবং আল নাসর ও আল হিলাল সমন্বিত দল রিয়াদ অল স্টার। ম্যাচটিতে ৫-৪ গোলে জিতে মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেরা।গোল বন্যার ম্যাচটিতে ঘটে ‘অপ্রীতিকর’ ঘটনাও। লাল কার্ড দেখেন পিএসজির জোয়ান বের্নাত। এরপর যোগ করা সময়ে নেইমারের পেনাল্টি মিস এবং বিরতিতে যাওয়ার আগে আবার রোনালদোর দ্বিতীয় গোল। হাইভোল্টেজ ম্যাচটিকে অবশ্য কেউ চাইলে ৬০ মিনিটের খেলাও ধরে নিতে পারে। কারণ এই খেলার আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকা তারকারা ওই সময়ের পর আর মাঠেই ছিলেন না। প্রথমার্ধের ২-২ গোলের পর এ সময়ের মধ্যে হলো আরও তিন গোল। স্কোরশিটে নাম লেখান রামোস-এমবাপ্পেও।
কাতার বিশ্বকাপের পর এটি এমন একটি ম্যাচ যা দেখতে মুখিয়ে ছিল গোটা ফুটবল বিশ্ব। ম্যাচটির গোল সংখ্যা ছাপিয়ে গেছে মেসি-রোনালদোর জাদুর ছোঁয়া। যতক্ষণ এ দুজন মাঠে ছিলেন সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছেন। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে এগিয়ে যায় পিএসজি। নেইমারের সহায়তায় দারুণ এক শটে বল জালে জড়ান আর্জেন্টাইন মহাতারকা মেসি। ম্যাচের ৩২ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে রোনালদোকে ফাউল করে বসেন পিএসজি গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। নিজের আদায় করা পেনাল্টিতে লক্ষ্য ভেদ করে ম্যাচে সমতা ফেরান ‘সিআর সেভেন’। এর সাত মিনিট পরই ৩৯ মিনিটের মাথায় লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পিএসজির জোয়ান বের্নাত। তবে ৪৩ মিনিটে মার্কিনিউসের গোলে আবারও এগিয়ে যায় পিএসজি। এ সময় জমে ওঠে খেলা। নেইমারের পেনাল্টি ঠেকান আল-ওয়াইস।
আর বিরতিতে যাওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে নিজের দ্বিতীয় গোল করে সমতা ফেরান রোনালদো। ২-২ গোলে শেষ হয় প্রথমার্ধ। বিরতির পরও জমে ওঠে রোমাঞ্চ। দুই দলই এগিয়ে যাওয়ার লড়াইয়ে মাতে। ৫৩ মিনিটে এমবাপ্পের দুর্দান্ত অ্যাসিস্টে গোল করে পিএসজিকে ৩-২ গোলে এগিয়ে দেন সার্জিও রামোস। এই গোলের জবাব দিতেও খুব বেশি সময় নেয়নি রিয়াদ অল স্টার। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে দুর্দান্ত এক হেডে লক্ষ্য ভেদ করেন জাং হিউং-সু। ৪ মিনিট পর পর ডি-বক্সের ভেতর হাতে বল লাগিয়ে পিএসজিকে পেনাল্টি উপহার দেয় অল স্টার। গোল করে পিএসজিকে ৪-৩ গোলে এগিয়ে দেন এমবাপ্পে। ৬২ মিনিটে অবশ্য রোনালদো, মেসি এবং এমবাপ্পে তিনজনই নেমে গেলে শান্ত হয়ে আসে খেলার উত্তাপ। ৭৯ মিনিটে একিতিকের গোলে ব্যবধান ৫-৩ করে পিএসজি। শেষ দিকে অল স্টার আরও এক গোল শোধ করলেও এড়াতে পারেনি ৫-৪ গোলের হার।