গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জমি জবর দখল করে বেআইনি ভাবে লাল পতাকা ঝুলানোর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর সাতগিরি কড়িরতল গ্রামে। সৎ মা ও বোনকে পিতার সম্পত্তির ভাগ বুঝে দিতে গিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নিদের্শে ক্রয় করা জমিতেও লাল পতাকা ঝোলানোর অভিযোগ উঠছে।
এনিয়ে সৎ ভাই আব্দুর রশিদ মিয়া স্থানীয় শালিস সভার বিরুদ্ধে তার ক্রয়কৃত সম্পত্তির মধ্যে বেআইনি ভাবে লাল পতাকা ঝুলানো ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেন।
জানা গেছে, বিগত ২০ বছর আগে ওই গ্রামের আব্দুর রশিদ মিয়ার বাবা আফজাল হোসেন মারা যান। আফজাল হোসেনের প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর সুফিয়া বেগমকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সুফিয়া বেগমের দুই জন কন্যা সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর তিন ছেলে ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
সুফিয়া বেগম স্বামীর বসত বাড়িতে আলাদা ভাবে অবস্থান করেন। দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সম্পত্তির কিছু নিয়ে চাষাবাদ করেন এবং অন্য জমির বদলে তার সতিনের ছেলেরা তাকে প্রতি মৌসুমে ধান দিতেন। যা দিয়ে তার সংসার চলতো। কিন্তু সুফিয়া বেগম তার স্বামীর অংশের ভাগ নিজের নামে নিতে বামনডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের নিকট সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আবেদন করেন।
গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কয়েক দফা বিবাদী পক্ষকে নোটিশ করলেও তিনি হাজির না হওয়ায় একক ভাবে শালিস ডেকে জমি ফারাইজ করে সৎ মা ও বোনের সম্পত্তি বুঝে দিতে স্থানীয় ফাহিম হাসান নামে এক ব্যাক্তিকে দায়িত্ব দেন।
ফাহিম হাসান চেয়ারম্যানের নির্দেশে ভাড়াটিয়া লোকজন ও গ্রাম পুলিশ নিয়ে আব্দুর রশিদের দখলে থাকা জমি জোরপূর্বক দখলে নেন এবং তাতে লাল পতাকা ঝুলে দেন। এতে আব্দুর রশিদের ক্রয় করা ১০ শতাংশ জমিতে লাল পতাকা ঝুলানো হয়।
আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, তার সৎ মা ও বোনদেরকে আলাদা ভাবে সম্পত্তি ভাগ করে দেয়া হয়েছে। তারপরও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একক ভাবে শালিস সভা করে তার ক্রয়কৃত জমিতে লাল পতাকা ঝুলে দিয়েছে। যা সম্পূর্ণরুপে বেআইনি। আর ফাহিম নামে ওই ব্যক্তি জমি দখল নিতে ওই দিন এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন।
বিধবা সুফিয়া বেগম জানান, তার স্বামীর সম্পত্তির সঠিক ভাগ সে পায় নাই। দীর্ঘদিন থেকে ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয়ভাবে বিচার চেয়ে কোন প্রতিকার আজও পায়নি। স্থানীয় ভাবে শালিস সভা জমি ফারাইজ করে লাল পতাকা ঝুলে দিলেও জমি দখলে নিতে পারেনি।
স্থানীয় বামনডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার মিয়া জানান, বহুবার গ্রাম আদালতের নোটিশ করা হয়েছিল। কিন্তু আব্দুর রশিদ আসেননি। তাই সম্প্রতি স্থানীয় সুধিদের নিয়ে গোটা সম্পত্তির ফারাইজ করে আব্দুর রশিদ মিয়ার সৎ মা ও বোনদের সম্পত্তি বের করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দখল করেনি। ক্রয়কৃত সম্পত্তির দলিল আব্দুর রশিদ মিয়া দেখাতে পারলে তা পরিবর্তন করে দেয়া হবে।