করোনাভাইরাসের কারণে তিন মাসেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এরই মধ্যে সারা দেশে কেটে গেছে ৬৬ দিনের অঘোষিত লকডাউন। ঈদের আগে সীমিত পরিসরে দোকান-পাট, শপিংমল খুললেও সারাদেশের মতাে ডেকোরেটর ও সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবসা সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে পড়েছে। অভাব অনটনে দিন কাটছে এ পেশায় নিয়োজিত মালিক- শ্রমিকদের। তাদের এ দুর্দিনে পাশে নেই কেউ। তাদের খবর রাখছে না কেউ।
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কালির বাজারের ছালাম সাউন্ড এন্ড ডেকোরেটরের মালিক আব্দুস ছালাম বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরােধে সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রায় তিন মাস ধরে তার ডেকোরেটরের ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল বেকার পড়ে আছে। তিনমাস হলো কোন ভাড়া না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে ধার-দেনা করে দিনাতিপাত করছি। তার উপর আবার দোকান ঘর মালিকের ঘর ভাড়া পরিশোধের চাপ তো রয়েছেই। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিয়ে,
ধর্মসভাসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ হওয়ায় তার ৬ জন কর্মচারীসহ সবাই বেকার হয়ে পড়েছেন।
ডেকোরেটর ব্যবসায়ি ফারুক হোসেন বলেন, জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে তিনি ডেকোরেটর ব্যবসা চালু করেন। ব্যবসা ভালােই চলছিল। সুখেই দিন কাটছিল। করোনাভাইরাস এসে অন্যসব ব্যবসা কম বেশি চললেও তার ডেকোরেটর ব্যবসা একে বারেই বন্ধ রয়েছে। এখন পর্যন্ত তিনি সরকারি কোনাে সাহায্য পাননি বলে জানান।
একই ধরনের মন্তব্য করলেন উদাখালী ইউনিয়নের মৌসুমী ডেকোরেটরের মালিক মধু মিয়া।
ডেকোরেটর শ্রমিক সাইদুল ইসলাম বলেন, ডেকোরেশনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা এ পেশায় নিয়োজিত শ্রমিকরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিনযাপন করছি। ধার – নাগানি (সুদের টাকা) নিয়ে অনেক কষ্টে সংসার চালাচ্ছি।
একই অবস্থা বিরাজ করেছে উপজেলার উদাখালী, উড়িয়া, কঞ্চিপাড়া, গজারিয়া, ফুলছড়ি, ফজলুপুর ও এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের ছোট-বড় ডেকোরেটর ও সাউন্ড সিস্টেমের মালিক এবং সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের। তাদের অভিযােগ, ব্যবসায়ী বলে তাদের কেউ সাহায্য করেন না। তারা বলেছেন, ছেলে মেয়ে ও সংসার আর জীবন বাঁচাতে ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে তাদের সরকারি সহায়তা দেয়া হােক।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু রায়হান দোলন বলেন, ডেকোরেটশন পেশায় জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা আমার নিকট প্রদান করলে আমি তাদেরকে সহায়তা প্রদান করব।
গাইবান্ধা জেলা ডেকোরেটর ও মাইক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া বলেন, জেলায় ছোট-বড় প্রায় ৮ শতাধিক ডেকোরেটর ও সাউন্ড সিস্টেমের দোকান রয়েছে এবং এ পেশায় প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছে।