বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় গত আড়াই মাস ধরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নেই। ভূমি অফিসে অ্যাসিল্যান্ড নেয় প্রায় ৭ মাস ধরে। (ইউএনও) দীর্ঘ আড়াই মাস ও অ্যাসিল্যান্ড ৭ মাস ধরে এ পদটি শূন্য থাকায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে নানাবিধ জটিলতা দেখা দিয়েছে। এছাড়া উপজেলার সাধারণ মানুষকেও প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৯ নভেম্বর সর্বশেষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেছিলেন মোহাম্মাদ রেজাউল করিম। তিনি ২০২৩ সালের ২৫ জানুয়ারি সারিয়াকান্দি থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে পদোন্নতি নিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার পর থেকে এ উপজেলায় এখন অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ধনুটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত।
সম্প্রতি তিনিও অন্যত্র বদলীর আদেশপ্রাপ্ত হয়েছেন। ফলে এ উপজেলা ইউএনও পদ শূন্য। অপরদিকে গত ২০২০ সালের ২৭ জুলাই সারিয়াকান্দিতে সর্বশেষ সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেছিলেন দেওয়ান আকরামুল হক। গত ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি পদোন্নতি পেয়ে সারিয়াকান্দি থেকে বিদায় নেন।
তারপর থেকে এ অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বর্তমান ইউএনও ও অ্যাসিল্যান্ড শূন্যতায় ধুকে ধুকে চলছে ভূমি অফিস। যে কারণে অফিসটির কাজ-কর্মে চরম ধীর গতি। ফলে চরম ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের। দীর্ঘদিন থেকে অ্যাসিল্যান্ডের পদটি খালি থাকায় অনেক ফাইল আটকে আছে।
ভূমি সংক্রান্ত বহু মামলার নিষ্পত্তি হচ্ছে না। জরুরি কোন কাগজপত্র সই করতে বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধুনট যেতে হয়। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের যাবতীয় কাজর্মের প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। গত কয়েকদিন আগে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক কাগজপত্র সই করতে মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আজগর ধুনট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে যাওয়ার সময় ধুনটে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
যা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর্তমান থাকলে এমনটি হতো না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন কোন জরুরি কাজ সৃষ্টি হলে সেই কাজের আমরা দ্রুত সমাধান দিতে পারি না। একাধিক এলাকাবাসী জানিয়েছেন প্রধান কর্মকর্তা না থাকায় বিভিন্ন অফিসগুলোতে চলছে নানা ধরনের কাজের গড়িমসি।
উপজেলা ভূমি অফিসের বিভিন্ন কর্মচারি জানিয়েছেন, সাত মাস ধরে তাদের অফিসে কোন কর্মকর্তা নেই। জমিজমার বিভিন্ন বিষয়াদি এখন তাদের অফিসে জমা পড়ে আছে। এদিকে জমাজমির বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্র ১ কিলোমিটার দূরের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে যেতে হয়।
বেশি জরুরি কোন কাজ হলে তা নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে ধুনট উপজেলাতে যেতে হয়। অফিসের কাজকর্ম সম্পাদন করতে তাদের হয়রানির কোন শেষ নেই। প্রশাসনিক নানান জটিলতা দূর করতে দ্রুত সারিয়াকান্দিতে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পদায়ন করতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হলে বগুড়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি একটা চাপের মধ্যে রয়েছেন। এ বিষয়ে একাধিকবার মিটিং এ কথা উপস্থাপন করেছেন। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সারিয়াকান্দিতে একজন নতুন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসবেন।