গাইবান্ধায় গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২২ মে) দুপুরে শহরের কলেজ রোডেস্থ সুন্দরজাহান মোড় সংলগ্ন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ গাইবান্ধা এরিয়া প্রোগ্রাম অফিসের হলরুমে অনুষ্ঠিত সভায় জেলার ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার ২০জন গণমাধ্যমকর্মী এ মতবিনিময় সভায় অংশ গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক দেবাশীষ রঞ্জন সরকার বলেন, ১৯৭৩ সালে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে। গাইবান্ধায় ২০২২ থেকে ২০২৩ সাল থেকে কার্যক্রম শুরু করে সংগঠনটি। দরিদ্র ও নিপীড়িত মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠা করা এবং সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশে কাজ করছে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন।
তিনি আরো বলেন, প্রতিটি শিশুর জীবন ভরে উঠুক পরিপূর্ণতায় এ স্বপ্ন বাস্তবায়নই তাদের মূল লক্ষ্য। এরই ধারাবাহিকতায় শিশুদের সার্বিক কল্যাণ সুরক্ষার লক্ষ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে গাইবান্ধায় কাজ করতে সাংবাদিকদের সহযোগীতা কামনা করে আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা “ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ”।
দিনব্যাপী ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ (এপি) কার্যালয়ে গাইবান্ধা শাখার এরিয়া প্রোগ্রাম ম্যানেজার উত্তম দাসের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনি মিলড্রেড ডি ক্রজ, কমিউনিকেশনস ম্যানেজার ঢাকার (মিডিয়া রিলেশনস) দেবাশিষ রঞ্জন সরকার,
কমিউনিকেশন কো-অর্ডিনেটর অবনী আলবার্ট, গাইবান্ধা এরিয়া প্রোগ্রাম অফিসের প্রোগ্রাম অফিসার আলবার্ট সরকার, জোসেপ মার্ডি, প্রেস ক্লাব সভাপতি কেএম রেজাউল হক, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবেদুর রহমান স্বপন, সাংবাদিক সরকার মো. শহীদুজ্জামান, গৌতমাশিস গুহ সরকার, ফিরোজ কবীর, দীপক কুমার পাল, ভবতোষ রায় মনা, জিল্লুর রহমান পলাশ, রিকতু প্রসাদ, সৈয়দ নুরুল আলম জাহাঙ্গীর, খালেদ হোসেন ও জাভেদ হোসেন প্রমূখ।
সভায় জানানো হয়, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ-এ গাইবান্ধা সদরের ঘাঘোয়া, গিদারী ও খোলাহাটি ইউনিয়নের ২৪টি গ্রাম এবং গাইবান্ধা পৌরসভার ৫, ৭ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ২ হাজার ২৮৯ শিশুকে নিয়ে কাজ করবে ওয়ার্ল্ড ভিশন। গাইবান্ধায় ১২ হাজার ২’শ ৮৯ জন হতদরিদ্র রয়েছে। তালিকাভুক্ত শিশু রয়েছে ২০২৯ জন।
এর মধ্যে ৮৮৭ জন পুরুষ ও ১১৪২ জন বালিকা রয়েছে। শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিষয়ে কাজ করার জন্য ৩৪ জন স্বেচ্ছাসেবীকে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। সে সাথে প্রতিবন্ধীদের নিয়েও তারা কাজ করছে। ইতিমধ্যে প্রতিবন্ধীদের তারা হুইল চেয়ার বিতরণ ও চিকিৎসার জন্য বাহিরে পাঠিয়েছেন। ৯৩ জন প্রতিবন্ধীর মধ্যে বালক ৫৬ জন ও বালিকা রয়েছে ৩৭ জন।
ওয়ার্ল্ড ভিশন অষ্টেলিয়ার অর্ধায়নে আগামী দশ বছর ধরে তারা এ জেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলে জানান। উল্লেখ্য; ওয়ার্ল্ড ভিশন একটি আন্তর্জাতিক খৃষ্টান মানবিক উন্নয়ন সংস্থা। যা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি বৈষম্যমুক্ত পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে।
১৯৫০ সালে ড. রব পিয়ার্সের হাত ধরে প্রতিষ্ঠানটি আত্মপ্রকাশ করে। আজ তা বিশ্বের কোটি কোটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুর ভাগ্যোউন্নয়নে কাজ করে চলেছে। ১৯৭০ সালে দক্ষিনাঞ্চলে জলোচ্ছাসে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে জরুরি ত্রান সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে ওয়ার্ল্ড ভিশন যাত্রা শুরু হয়।